
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ‘এইচ এম আল আমিন আহমেদ’ তাঁর ফেসবুক টাইমলাইনে একটি হৃদয় বিদারক স্ট্যাটাস দিয়েছেন যা অনলাইনে ইতিমধ্যে বেশ আলোচিত হচ্ছে ।এই নিউজের শেষের দিকে আমরা কিছু ছবি সংযুক্ত করেছি যা দেখে আপনারা বুঝতে পারবেন কি পরিমাণ ত্যাগী ছিলেন এই ছাত্রনেতা । যাহোক, সকল পাঠকের জ্ঞাতার্থে তাঁর স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরছিঃ
…………………………………………….
সারা দেশে যারা জানেন আমি চামবাজি করিনা, কিংবা করতে জানিনা!
তাদের উদ্যেশ্যে বলছি………………………
আপনারা কি জানেন আমি ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রার্থী হয়েও তথাকথিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সিন্ডিকেটের নীল নকশার ভোটে হেরেছি। শুধু তাই নয় পুর্নাঙ্গ কমিটি থেকে ও বাদ দেয়া হয়েছে।
তারপর ও দীর্ঘ আড়াইটা বছর অপেক্ষা করেছি।শুধু ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় কমিটিতে একটি পরিচয় পাবার জন্য।
অথচ আজকে যারা কেন্দ্রিয় কমিটিতে আছেন তাদের বুকে পবিত্র কোরআন এবং গীতা, বাইবেল যায় ধরিয়ে বলুন তারা অস্বীকার করতে পারবেনা, দলের দুর্দিনে আমার কি ভুমিকা ছিলো? আমি শুধু ছাত্র রাজনীতি করিনি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পুজা করেছি।
ছাত্র রাজনীতি অবস্থায় কোনদিন কোন অপকর্ম তো দুরের কথা সরকারী চাকরীর জন্য ও এপ্লাই করিনি।
আমার একমাত্র লক্ষ এবং উদ্যেশ্য ছিলো রাজনীতি করা অথচ আমাকেই রাজনীতি করতে দেয়া হয়নি!?
তারপরেও তথাকথিত সিণ্ডিকেটর প্রধানের পা ধরে বলেছি একটি পরিচিয় দিতে। অনেকবার আশ্বস্ত করেও দেয়নি।
যাকে নেতা মেনে রাজনীতি করেছি, তার পায়ে ধরে বলেছি একটা পরিচয় দিন। কিন্তু সে ও দেইনি।
আমার জন্য নিজের রাজনীতির ক্ষতি করে সিন্ডিকেটের সাথে ঝামেলায় যায়নি।যে নেতাকে খুশি করার জন্য অনেকের সাথে রাজনীতি করা অবস্থায় ভুল করেছি তাদের পায়ে ধরে বলেছি। আমি অতীতে ভুল করেছি। কার রাজনীতি করেছি সেটা বড় কথা নয়?আমি শেখ হাসিনাকে ভালবাসি । দলের দুর্দিনে ছিলাম, আপনারা আমাকে আমার শ্রমের মর্যাদা দিন। আমি রাজনীতি ছাড়া কিছু করিনি,আপনারা আমাকে আমার জীবনের ছন্দ ফিরিয়ে দিন।কিন্তু কারো মন গলেনি:(নিজের নেতা সহ সিণ্ডিকেট সদস্যদের কে নেত্রীর দোহায় দিয়েছি, তাদের বাবা মা, সন্তানের দোহায় দিয়েছি। নিজের মা বাবা পরিবার তথা নিজের জীবনের দোহায় দিয়েছি।সবাইকে বলেছি আপনারা আমাকে শুধু একটি পরিচয় দিন।কিন্তু তারা দেয়নি।অসংখ্য বার আমাকে মিথ্যে আশ্বাস দিয়েছে।
সারা দেশ জানে আমাকে ২০১৬ সালের ২২ শে ফেব্রুআরি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটিতে যুগ্ম সাধারন সম্পাদক থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।কিন্তু আপনারা জানেন না বিগত আড়াই বছরে মিনিমাম আমাকে ১০বার কনফার্ম পদ দিবে বলেও দেয়নি। বার বার স্বপ্ন ভাঙ্গার কি কষ্ট তা আমার চেয়ে ভাল কেউ জানেনা।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের এই বছর জুলাই মাসেও সিন্ডিকেটের প্রধান আমাকে নিশ্চিত করেছে আগস্টের পর আমাকে পদ দিবে, কিন্তু তাও কথা রাখেনি।
অবশেষে আমি বুঝতে পারলাম বাংলাদেশ ছাত্রলীগে আমার পদ হবেনা।যাদের কাছে জননেত্রী শেখ হাসিনার দোহায়।
জীবন ভিক্ষা চাওয়ার দোহায়ের মুল্য নাই! তাদের পিছনে ঘুরে সময় নষ্ট করে লাভ নাই!:(তাদের পিছনে, যত অনুনয় বিনয় করেছি,জীবন ভিক্ষা চেয়েছি, ততটুকু অসহায়ত্ব যদি শিবিরের কাছে প্রকাশ করতাম তাহলে শিবির আমাকে ক্ষমা করে দিতেন! যে শিবির অসংখ্যবার আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন,সে শিবিরের মনেও দয়া হতো। তারাও জীবন ভিক্ষা চাইলে হয়তো ক্ষমা করে দিতো!
আমার মনে কোন আর আক্ষেপ নাই।আপনারা বলতেন আমি চামবাজি পারিনা।আমি ন্যায়ের পক্ষে কথা বলি,
তাই আমার পদ হয়নি । আশা করি এই লেখা পড়ে কেউ বলতে পারবেন না! আমি চামবাজি করিনি। মাথা নত করিনি।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগে কেন্দ্রিয় কমিটিতে আমার কর্মী,যাদের আমি নিজের হাতে রাজনীতিতে এনেছি। এমন অনেকেই সহ সভাপতি, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক,সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদক, উপ সম্পাদক, সহ সম্পাদক রয়েছেন।ছাত্রলীগ পরিবার তথা ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অনেকেই তা জানেন। আফসোস শুধু আমার জায়গা হলোনা!
অথচ চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি,যদিও নিজের কথা এভাবে বলা উচিৎ নয়।দলের দুর্দিনে আমার যতগুলো মারামারি,
আন্দোলন সংগ্রাম, পত্রিকার নিউজের ছবি আছে,বর্তমান কমিটির ৯০% নেতার ততগুলো প্রোগ্রামের ছবিও নাই।
আমি টেন্ডারবাজ, গাড়ী ছিনতাই কারী,কিংবা শিবির, ছাত্রদল করা কর্মী নয়!আমি ইয়াবা ব্যবসায়ী, অছাত্র, সন্তানের জনক,অপহরন মামলার আসামী, প্রশ্নফাস ব্যবসার,তথা অনুপ্রবেশকারী, হাইব্রিড নয়। যাদের কমিটিতে জায়গা দেয়া হয়েছে।
আমি এইচ এম আল আমিন আহমেদ,বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, জননেত্রীর শেখ হাসিনার প্রশ্নে জীবন বাজি রাখার কর্মী।পরম অভিমানে বিদায় জানাচ্ছি।বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কে।যতদিন বেঁচে থাকবো এক বুক যন্ত্রনা নিয়ে বেঁচে থাকবো ছাত্রলীগ থেকে অন্যায় ভাবে বঞ্চিত হবার কষ্টে।যদি কখনো ভবিষ্যতে কোনদিন কোন আওয়ামী সহযোগী সংগঠনে কিংবা আওয়ামীলীগে, কিংবা সংসদে জায়গা নাও পাই আজিবন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নৌকার একজন ভোটার হিসেবে, সমর্থক হিসেবে কাজ করে যাবো।লিখতে গেলেও হাজার কথা লেখা যাবে,কিন্তু এখানেই শেষ করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
এইচ এম আল আমিন আহমেদ,
সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক,
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়।
সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক
কবি জসীম উদদীন হল ছাত্রলীগ।
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক,
বীরগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রলীগ।
সাবেক কর্মী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ।
বিঃ দ্রঃ অতি শিঘ্রই আমি ছাত্রলীগ থেকে আনুষ্টানিক বিদায় নিচ্ছি।
ভাল থাকুক ভালবাসার প্রানের ছাত্রলীগ।
তবে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে আজিবন আমি ছাত্রলীগের সাথে আছি।