
সাইফুল ইসলাম বিপ্লবঃ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে পাঁচবছর ধরে সম্পৃক্ত গোলাম রাব্বানী বিভিন্ন সময় বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক,সোহাগ-নাজমুল কমিটিতে উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক এবং বিদায়ী কমিটিতে শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বাড়ি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার বদরপাশা গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় পঞ্চম হয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। গোলাম রাব্বানীর পিতা আবদুর রশিদ মিয়া জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংস্পর্শ পাওয়া একজন সরকারি কর্মকর্তা।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শে গোলাম রাব্বানীকে অনুপ্রাণিত করেন তার নানা মরহুম শামসুদ্দিন আহম্মেদ। তিনি ছিলেন রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি (১৯৬৪-৭৪) এবং চারবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। নানার মুখ থেকে বঙ্গবন্ধুর গল্প শুনে বড় হয়ে উঠা এই ছাত্রনেতা কলেজ জীবন শুরু থেকেই ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। রাব্বানীর মা একসময় ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত থাকায় পারিবারিকভাবেও পেয়েছেন উৎসাহ উদ্দীপনা।
শিক্ষা জীবনে মা ছিলেন মাদারিপুরে ছাত্রলীগের নেত্রী। ছেলেদেরও বড় করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে। মায়ের বড় আশা ছিল ছেলে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিবে। মানবিক কাজ করবে। তাই মায়ের কথা মেনে ছেলে যখন রাস্তায় কাউকে বিপদে দেখতেন সঙ্গে সঙ্গে সহায়তা করতেন। সহায়তায় মূল অর্থটা মায়ের কাছ থেকেই নিতেন গোলাম রাব্বানী।
এই মায়ের দুই ছেলে গোলাম রাব্বানী এবং গোলাম রুহানী দুইজনই পড়াশুনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।দু’জনই ছাত্রলীগের কর্মী। একজন পড়েছেন বাণিজ্য অনুষদে গোলাম রুহানী এবং বড় ছেলে গোলাম রাব্বানী চতুর্থ স্থান অধিকার করে ভর্তি হন বঙ্গবন্ধু বিভাগ আইন অনুষদে। সেই মায়ের ছোট ছেলে গোলাম রুহানী একইদিনে হয়েছেন পুলিশের এ এস পি এবং বড় ছেলে গোলাম রাব্বানী হয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক।
গোলাম রাব্বানীর মা বঙ্গবন্ধুকে এবং শেখ হাসিনাকে কতটা ভালোবাসতেন তা ওই মায়ের সাথে কথা না বললে অনুমান করা কঠিন। তিনি জীবনের শেষ সময়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় বসে নিজ হাতে বানিয়েছেন বন্ধবন্ধুর প্রতিকৃতি ।আজ মা নেই, সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন,ছেলেদের নিয়ে যে স্বপ্ন তিনি দেখছিলেন তা ঠিকই পূর্ণ হলো কিন্তু তা তিনি দেখে যেতে পারেননি।এটাই তার দুই সন্তানের কষ্ট এবং আক্ষেপ। তবে তারা বদ্ধপরিকর যে মায়ের প্রতিটি আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যাবে, যাতে মা ওপারে থেকেও দেখে দেখে শান্তি পান।আল্লাহ যেনো সেই আশাই ব্রত করেন।
ছোটবেলা থেকেই গোলাম রাব্বানী লেখালেখির সঙ্গে সম্পৃক্ত। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তার একাধিক নিবন্ধ। এবারের বইমেলায় একাত্তর প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত হয়েছে গোলাম রাব্বানীর লেখা গবেষণা গ্রণ্থ ‘ ছাত্রলীগের ঐতিহাসিক অর্জন’। বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত এই ছাত্রেনেতা তৃণমূল ছাত্রলীগ কর্মীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। ২০১৪ সালে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করায় ব্যারিস্টার তুহিন মালিকে বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে আলোচিত হয়েছিলেন এই ছাত্রনেতা এবং গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরানের বিরুদ্ধে ও মামলা করেন , প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে অশালীন ও কটূক্তি করে শ্লোগান দেবার কারণে।
পরিশেষে বলবো ছাত্রলীগের একটা ক্রান্তিকালীন সময়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মতো ঐতিহ্যবাহী সংগঠন গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন ছাত্রলীগ কে নিয়ে যেই দূরদর্শী চিন্তা করে নিজ দায়িত্বে কমিটি গঠন করার অভিপ্রায় করেছেছিলেন তা মনেকরি সঠিক দময়ে সঠিক সিদ্ধান্তই তিনি করেছিলেন। তিনি যাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে মনোনয়ন করেছে। তা একেবারে সঠিক ভাবেই মনোনয়ন করেছেন। আমি মনে করি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছ থেকে পাওয়া আমানত হিসেবে মনে করছি। আশাকরি রাব্বানীর উপর অর্পিত দায়িত্ব যেন সঠিকভাবে পালন করতে পারে সেই কামনা সবসময় ই থাকবে। তোমরাই ছাত্রলীগের রাজপথের লড়াকু সৈনিক, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একমাত্র অনুসারী।তোমরা সর্বস্তরে ছাত্রলীগের আদর্শের দূত হয়ে ছড়িয়ে দিবে এই ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের আলোরবার্তা। ঘরে ঘরে জন্ম নিবে মুজিব আদর্শের দিকপাল। আমি তোমার সফলতা ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।